শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
সংবাদ শিরোনাম :
দিরাইয়ে পৃথক স্থানে বজ্রপাতে হতাহত ৪ নিজ এলাকার মানুষের পাশে রয়েছেন এমপি প্রার্থী রশিদ মিয়া সম্প্রসারণবাদ, আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী গণজোয়ার সৃষ্টি করে মজলুম গাজাবাসীদের পাশে দাঁড়ানো উম্মাহর আবশ্যিক দায়িত্ব দিরাইয়ের সাবেক এমপির স্ত্রী-মেয়েকে মারধরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ ভারতের ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করতে লিগ্যাল নোটিশ পাচার হওয়া মেধা ফিরিয়ে এনে উন্নত দেশ বিনির্মাণে ড. ইউনূসের যুগান্তকারী কৌশল দিরাইয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালিত দিরাইয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঈদুল ফিতর পালিত দেশে দেশে ঈদ উদযাপিত দেশের আকাশে দেখা গেছে শাওয়াল মাসের চাঁদ, ঈদ কাল
‘সরকারের ‘দুর্বলতাকে’ কাজে লাগিয়ে বেপরোয়া পুলিশ’

‘সরকারের ‘দুর্বলতাকে’ কাজে লাগিয়ে বেপরোয়া পুলিশ’

dw--- 1_97847আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : জনতার বিক্ষোভ মিছিলে গুলি৷ চারজন নিহত৷ ১১ মাসের শিশু কারাগারে৷ দু’পা নেই এমন আসামিকে হাতকড়া পরানো৷ পুলিশের এমন ভূমিকা কেন? সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে, যেমন টুইটার, ফেসবুক আর ব্লগে এ প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন অনেকে৷ গত ১৮ই সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে পুলিশের গুলিতে চারজন মারা যান৷ ছেলের সামনে মাকে নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার প্রতিবাদে জনতা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ বিক্ষোভ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায় বলে স্থানীয়দের দাবি৷ বিষয়টি নিয়ে ব্লগ লিখেছেন গৌতম হালদার৷
এ ঘটনাকে একাত্তরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং রাজাকার-আলবদরদের পৈশাচিকতার সঙ্গে তুলনা করে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি মুক্তিযুদ্ধকালীন অসংখ্য অনুরূপ ঘটনাকে কোনো অংশে খাটো করে দেখি না, তবে কালিহাতির এই ঘটনা মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটনার চেয়ে কোনো অংশে খাটো নয়৷….একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কী করে এই ‘বর্বর’ কাণ্ড একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সংঘঠিত হতে পারে, সেটা আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে কুলোয় না৷”
গৌতম সরকার মনে করেন, ‘‘স্বাধীন বাংলাদেশে পাঞ্জাবি পশুদের রয়ে যাওয়া উত্তরসূরিরা তাদের পূর্বপুরুষদের মতোই চারিত্রিক দোষাবলী এখনও বহন করে৷ ওরা পাকিস্তানিদের ধর্ষণকামী বির্যৌত্থিত উত্তরপুরুষ৷ গত ৪৫ বছর ধরে এ সুজলা-সুফলা বাংলার জল-হাওয়া ওদের পিতৃপুরুষদের কাছ থেকে প্রাপ্ত চরিত্রের কোনো পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি৷ পারেনি মা আর মায়ের সম্ভ্রম রক্ষায় জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এ দেশের সন্তানেরা কতবড় ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত, তার ধারণা ওদের অবর্জনাপুর্ন মস্তিষ্কে ঢুকিয়ে দিতে৷”
সামহয়্যারইন ব্লগে ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন একই ঘটনা সম্পর্কে লিখেছেন, ‘‘যে কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করা কোনো সুস্থ মানুষ বা কোনো সুস্থ সমাজের দায়িত্ব৷ কিন্তু কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদকারীদের গুলি করে হত্যা করা কোনো সুস্থ জাতি বা কোনো সুস্থ বাহিনীর পক্ষে আদৌ সম্ভব কিনা, সেটাই একটা প্রশ্ন৷ ব্লগপোস্টের শেষ দিকে হ্যাভেনের বিশ্লেষণ, ‘‘সরকার ভাবছে, তাদের ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য পুলিশই একমাত্র নিয়ামক৷ তাই সরকার যেমন পুলিশনির্ভর হয়ে পড়ছে আর সরকারের এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পুলিশ ও চরম বেপরোয়া হয়ে পড়েছে৷”
এদিকে টাঙ্গাইলের ঘটনায পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন, তদন্ত ও বিচারের দাবি সব মহল থেকেই উঠেছে৷ তবে অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেছুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘ঘটনার পর (ধর্ষণের) মামলা হয়েছে, পুলিশ ওই ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তারও করেছে৷ কিন্তু একদিন পর মহাসড়ক বন্ধ করা, আমি মনে করি এখানে তৃতীয় কোনো বিষয় জড়িত আছে৷” তিনি আরো বলেন, ‘‘একটি ঘটনা ঘটেছে, মামলা হয়েছে, পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করেছে৷ সব কিছু ঠিকমতো যখন এগোচ্ছে, তখন মহাসড়ক বন্ধ করে দিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে কেন, সেটা বুঝতে হবে৷” পরে অবশ্য ঘটনা তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে৷
কালিহাতি থানার ওসিসহ বেশ কয়েকজনকে প্রত্যাহার করা হযেছে৷ ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে আদালতে৷ অন্যদিকে পুলিশ ঘটনার জন্য দায়ী করে অজ্ঞাতনামা সাতশ’ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে৷ স্বাভাবিক কারণেই সেই মামলা প্রত্যাহারের দাবিও উঠছে৷ সব মিলিয়ে কালিহাতির ঘটনায় পুলিশের প্রতিটি পদক্ষেপই হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ, বিতর্কও বেড়েছে৷
সাম্প্রতিক কালে অবশ্য আরো কিছু ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা এবং উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ কয়েক দিন আগে রাজধানী ঢাকার বনশ্রী থেকে ১০ শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ৷ তখন চারজন তরুণকেও গ্রেপ্তার করা হয়৷ তরুণরা দাবি করছেন, সেবার উদ্দেশ্য নিয়েই তাঁরা ‘অদম্য বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে ওই শিশুদের লালন-পালন ও পড়াশুনা করাচ্ছিল৷ শিশুদের পাচার করা বা ওদের কোনো ক্ষতি করার উদ্দেশ্য তাদের ছিল না৷ কিন্তু পুলিশ তরুণদের শুধু গ্রেপ্তারই করেনি, অতি দ্রুত রিমান্ডে নিয়েছে৷ এখনো সেই চার তরুণ কারাবন্দি৷
পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারি কশিমনার মিরাশ উদ্দিন বলেছেন, ‘‘অদম্য বাংলাদেশ সংগঠনটির যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন নেই, নেই এনজিও ব্যুরোর কোনো ছাড়পত্র বা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কোনো সনদ৷ ভিযুক্তরা শিক্ষিত, লেখাপড়া জানা নাগরিক৷ অথচ আইন জানেন না৷” শিক্ষিত যুবকদের আইন জানার কথা৷ কিন্তু ১১ মাসের শিশুর পক্ষে তা-ও সম্ভব নয়৷ অথচ বগুড়ায় এক নারীর সঙ্গে তাঁর ১১ মাসের সন্তানকেও ১৯ ঘণ্টা কারাগারে রেখেছে পুলিশ৷ পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, এত কম বয়সি শিশু মা-কে ছাড়া থাকতে পারবে না বলেই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে৷
চট্টগ্রামে দুই পা হারানো এক আসামিকেও হাতকড়া পরানোয় গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে৷পরে একজন পা-হীন ব্যক্তিকে হাতকড়া পরানোয় তিন পুলিশ সদস্যকে ‘ক্লোজড’ করা হয়৷
এর আগে সাংবাদিক, শহিদ পরিবারের সন্তান প্রবীর সিকদারকে হাতকড়া পরিয়ে তড়িঘড়ি রিমান্ডে নেয়ার কারণেও সমালোচনার মুখে পড়েছিল পুলিশ৷ সন্ত্রাসী হামলার কারণে প্রবীর সিকদারেরও একটি পা এখন অকেজো৷ পুলিশের এমন প্রশ্নবিদ্ধ আচরণের পাশাপাশি দু-একটি ভালো দৃষ্টান্তও দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ৷ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভ্যাট বিরোধী আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে প্রত্যাশিত সহনশীলতাই প্রদর্শন করেছে পুলিশ৷ সূত্র : ডয়চে ভেলে

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com